আজ থেকে ১৫/১৬ বছর আগের ঘটনা। নদী তখন কুমারী নারীর মত ভরা যৌবনা। একটা ঢেউয়ের চাপ সামাল দেয়ার আগে আরো দুইটা ঢেউ আছড়ে পড়ছে। ভাদো আউষা (ভাদ্র মাসের আমাবস্যা জোর সময়) জনা চল্লিশেক যাত্রী নিয়ে আবদুল্লাহ মাঝি কাচ্চাখালী ঘাট সন্দ্বীপ থেকে ছোঁয়াখালী ঘাট চট্টগ্রামের উদেশ্য রাওনা দেন। প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে লঞ্চ এগুতে পাড়ছিলোনা। মনেহচ্ছিল এই বুঝে ডুবে গেলো/যাচ্ছে। যাত্রীদের #কান্না_কাটি শুরু হলো। দোয়া দরুদ পড়ছি। দোয়া ইউনুস পড়ছি।
আবদুল্লাহ মাঝির হেলপার হোড়া কাজী ও একটু ভিতু প্রকৃতির ছিলো। এরকম পরিস্হিতিতে যাত্রীর আগে সে ঘাবড়ায় যেতো।
লঞ্চ তখন মাঝ নদীতে হবে হয়তো। হাঠাত করে গান গাওয়া শুরু করলাম।
#আমি_ভাবছিলাম_কি রঙে দিন যাবেরে সুজনো নাইয়া
পাড় করো শ্যাম কালারে
তুমি তো সুজনো নাইয়া
আমারে নাও পাড় কইরারে
ওরেও সুজনো নাইয়া
পাড় করো শ্যাম কালারে।
………………………………..
…………………………………
আমার বেলা গেলো সন্ধ্যা আইলো
ঘরে ফেরার সময় হইলোরে ওরে ঔ ঔ নাইয়া
পাড় করো শ্যাম কালারে
হঠাত একজন খুব ক্ষেপে গিয়ে কয় এটা গান গাওয়ার সময়? আমি আসলে গেয়েই যাচ্ছিলাম। হেতে চরমে গিয়ে কয় বেয়াদব, বদমাশ।
বললাম এরুম করেন ক্যা আপনি আপনার আল্লাহরে ডাকেন আমিও আমার আল্লাহরে ডাকছি। ডাকার ধরন ভিন্ন আর কি। তোরগো কোন বাড়ী?
বললাম মোল্লা বাড়ী। হেতে ভগর ভগর কইতেই রইছে।
এক পর্যায়ে বললাম দশা কুদানে হারামজাদা। চুপ থাক
আরেকবার কতা কইলে তোরে খাইছি।
চুপ হয়ে গেলো ।
কোান এক সময় ৬ঘন্টা ১৫ মিনিটের যুদ্ধ শেষে কুলে পৌছলাম।
সেদিন গান গাওয়াতে ওনার অনুভূতি তে আঘাত লেগেছিলোা কিনা যানিনা তবে আজকের দিনে হলে লাগতোই লাগতো।
শরিয়ত বয়াতির চেলেঞ্জ নেয়ার মতো কোন ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশে নাই এটা আমাকে চিন্তিত করেছে।
৫০ লাখ টাকার অফার কউ গ্রহন করলোনা।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার দায়ে ওনাকে জেলে ঢুকানে হলো। রিমান্ডও মন্জুর হয়েছে।
কি অদভোদ এক জাতি শরিয়ত বয়াতিকে গ্রেফতার করাতে সহমত ভাইয়ের সংখ্যা নির্ধারণ করা না গেলেও
মাইয়া ও মাইয়া তুই অপরাধী রে।
আমার যত্নে গড়া ভালবাসা দে ফিরাইয়া দে গানের ভিউয়ার ২৫০ মিলিয়ন।
বিয়ের গায়ে হলুদে আশপাশের দুইশোা বাড়ীর লোকজনের ঘুম হারম করে দেয়া শুয়রটাও কয় সহমত ভাই।
একটা ছোট্ট বাজারে উত্তর বাজার, দক্ষিণ বাজার,পশ্চিম বাজার মধ্যম বাজার এবং সিএনজি অটোরিকশা ড্রাইভার সমিতির উদ্দোগে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন হুজুর দিয়ে ওয়াজের আয়োজন করা হয়। মাইক লাগানো হয় বাড়ীর ছাদে। বিকেল চারটায় শুরু হয় শেষের কোন টাইম নাই।
এসব ওয়াজ মেহফিলে আবার মমতাজ,মমতা চুলকানি হুজুরের ভাষায় ওনাদের গানের প্যারোডি করে অঙ্গভঙ্গি করে গান গায় ওয়াজের সুরে সুরে।
শেষে ইউটিউবে দেয় অমুক হুজুরের হাসির ওয়াজ। অডা ওয়াজ আবার ☺ হইবো কা?
নোট > সঙ্গীত মনের কালিমা দুর করে, শিল্পির কোন ভুখন্ড নাই কাটা তারের বেড়া নাই। যে সুর বিদ্বেষ ছড়ায় তা অপসংস্কৃতি তা লোকে শুনেনা।
ভাটিয়ালি,মুর্শিদি , রাম, প্রাসাদি, কীর্তনী বাংলার ঐতিহ্য বাংলার শেকড়।
রাজনীতি থাকুক রাজনৈতিক ময়দানে
ধর্ম থাকুক বিশ্বাসে
মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডায়।