• সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন

অনৈতিক সুবিধা নিতে গিয়ে সন্দ্বীপে লাঞ্ছিত কথিত সমন্বয়ক

ডেস্ক রিপোর্ট / ৫৯ ৪ ৯
আপডেট: শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রভাব খাটাতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন শরীফ হোসাইন নামের এক যুবক। শনিবার দুপুরে স্পিডবোট ঘাটে নিয়ম না মেনে জোরপূর্বক উঠতে গেলে ঘাটের কুলি ও শ্রমিকদের হাতে তিনি লাঞ্ছিত হন বলে জানা গেছে। অভিযুক্ত শরীফ হোসাইন উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি সাবেক এমপি মিতার পিএস জসীম চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পরিচিত এবং সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘাট সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে যাত্রীদের ভিড় থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কাটছিলেন। কিন্তু শরীফ হোসাইন নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে লাইন ভেঙে সরাসরি স্পিডবোটে ওঠার চেষ্টা করেন। এসময় ঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা বাধা দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে টিকেট বিক্রেতার হাত থেকে টিকেটের বই কেড়ে নেন এবং হট্টগোল শুরু করেন। একপর্যায়ে ঘাটের কুলি ও উপস্থিত সাধারণ জনতা ক্ষুব্দ হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেন।

ঘটনার বিষয়ে ঘাটের টিকেট বিক্রেতা আকবর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সবাইকে লাইনে দাঁড়াতে হয়। কিন্তু শরীফ নিয়ম না মেনে জোর করে স্পিডবোটে উঠতে চান। আমরা বাধা দিতে গেলে তিনি আমাদের হাত থেকে টিকেট বই কেড়ে নেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আকবর আরও বলেন, আমার চাকরি বাঁচানোর জন্য শরীফ থেকে আমি টিকেট বই কেড়ে নিতে বাধ্য হই।

স্পিডবোট কোম্পানির প্রতিনিধি ও কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, শরীফ প্রায়ই নিজেকে সমন্বয়ক বা প্রভাবশালীদের লোক পরিচয় দিয়ে বিনা ভাড়ায় আসা-যাওয়া করতে চান। ভাড়ার কথা বললেই তিনি প্রশাসনের ভয় দেখান এবং হুমকি-ধমকি দেন।

ঘটনা সম্পর্কে শরীফের বক্তব্য জানতে একাধিকবার তাকে কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শরীফ হোসাইন রাজনৈতিক ভোল পাল্টে বর্তমানে সমন্বয়ক সাজার চেষ্টা করলেও তার অতীত অপরাধ কর্মকাণ্ডে ভরা। তিনি হারামিয়ার বিতর্কিত চেয়ারম্যান জসীমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। অতীতে ইয়াবাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনি দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। জেল থেকে বের হয়ে কিছুদিন গা ঢাকা দিয়েছিলেন শরীফ। তবে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর তিনি পুনরায় এলাকায় ফিরে আসেন এবং নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে স্থানীয়ভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা শুরু করেন।

স্থানীয়রা জানান, সমন্বয়ক পরিচয় ব্যবহার করে এমন অপরাধীরা ছাত্র আন্দোলনের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে। প্রশাসনের উচিত এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।


Skip to toolbar