বিশেষ প্রতিবেদকঃ
সন্দ্বীপে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেনের সমর্থনে আয়োজিত মহাসমাবেশে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢল নেমেছে। শনিবার বিকাল চারটার দিকে মুছাপুর ধোপার হাটের দক্ষিণ মাথা জুড়ে সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। দুপুর থেকেই আশপাশের এলাকা ব্যানার–ফেস্টুন, মিছিল, স্লোগান আর মাইকের প্রচারণায় উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।
উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ডখণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে পৌঁছান। ধানের শীষের পক্ষে শ্লোগান দিতে দিতে তারা সমাবেশে যোগ দেন। স্থানীয়রা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সন্দ্বীপে এতো বড় রাজনৈতিক সমাবেশ আর দেখা যায়নি।
মহাসমাবেশের সভাপতিত্ব করেন মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির। সঞ্চালনা করেন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আবদুল আজিজ।
প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও মনোনয়নপ্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সারিকাইত বিএনপি সভাপতি গাজী হানিফ, হারামিয়া বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর, কালাপানিয়া বিএনপি সভাপতি বাহার, মাইটভাঙ্গা সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম রাজু, উত্তরজেলা যুবদলের ত্রাণ ও পূণর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক শাকিল চৌধুরী, আজিমপুর সাধারণ সম্পাদক এহসান, কালাপানিয়া সাধারণ সম্পাদক হাজী নিজাম উদ্দিন।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আকবর হোসেন, মুছাপুর যুবদল সভাপতি আলিম, সারিকাইত যুবদলের আহ্বায়ক নূরনবী, মগধরা যুবদল সাধারণ সম্পাদক নাছির, মগধরা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম শিপন, উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নাছির, মগধরা বিএনপি সদস্য ইকরামুল হক আজিম ও মুছাপুর ছাত্রদল নেতা তামিম।
বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন বলেন,
“সন্দ্বীপবাসীর প্রধান সমস্যা যাতায়াত ব্যবস্থা। একটি দ্বীপের মানুষের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ বারবার উপেক্ষিত হয়েছে। আমি জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও অস্ত্রমুক্ত সন্দ্বীপ গড়ার পাশাপাশি যাতায়াত সংকটের স্থায়ী সমাধানই হবে আমার প্রথম কাজ।”
তিনি আরও জানান, উন্নয়ন বঞ্চিত এই দ্বীপে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কৃষি ও জেলে সম্প্রদায়ের সুবিধা নিশ্চিত করাও তার অঙ্গীকারের অংশ।
সন্দ্বীপের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বহুদিন ধরেই নৌপথনির্ভর এই অঞ্চলে যাতায়াতব্যবস্থা অন্যতম বড় সমস্যা।
স্থানীয়দের অভিযোগ—
নিয়মিত ফেরি বা নিরাপদ নৌযান না থাকায় প্রতিদিন জীবনঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়
জরুরি রোগী পরিবহন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ছাত্র–ছাত্রীদের যাতায়াত বাধাগ্রস্ত
কুমিরা–গুপ্তছড়া ঘাট বারবার সংস্কারের দাবি উঠলেও স্থায়ী সমাধান হয়নি
সমাবেশে অনেক নেতাকর্মী এ দাবিকে তীব্রভাবে তুলে ধরেন এবং বলেন, “যাতায়াত উন্নয়ন ছাড়া সন্দ্বীপের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
বক্তব্যপর্ব শেষে ধানের শীষের স্লোগানে পুরো এলাকা মুখর হয়ে ওঠে। সন্ধ্যা নেমে এলেও নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে এলাকায় অবস্থান করেন। অনেকেই মোবাইলে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ প্রচার করেন।
স্থানীয়দের মতে, এই সমাবেশ শুধুমাত্র রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শন নয়—এটি আগামী নির্বাচনে সন্দ্বীপের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তৃণমূলে বিএনপির উপস্থিতি ও সংগঠনের শক্তি আবারও দৃশ্যমান হয়েছে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।
একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, “মানুষ উন্নয়ন চায়। যাতায়াত সমস্যার সমাধান নিয়ে যিনি বাস্তব কাজ করতে পারবেন, জনগণের সমর্থন তার পক্ষেই যাবে।”
আরেকজন শিক্ষক বলেন, “সমাবেশ দেখেই বোঝা যায়—আগামী নির্বাচন সন্দ্বীপে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।”
সন্দ্বীপ জার্নাল