• মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০৯ অপরাহ্ন

মগধরায় নারী প্রতারক গ্রেপ্তার: কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

সন্দ্বীপ জার্নাল ডেস্ক: / ৫১৪ ৪ ৯
আপডেট: শনিবার, ৯ মে, ২০২০
মগধরায় নারী প্রতারক গ্রেপ্তার: কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
মগধরায় নারী প্রতারক গ্রেপ্তার: কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

মগধরা ৯ নং ওয়ার্ডে মমতাজ বেগম প্রকাশ মমতা নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা ভুক্ত এক প্রতারক নারীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে জনতা ।

গেল মঙ্গলবার (৫ মে) রাত ১ টায় মগধরা জনতা মার্কেট এলাকার একটি বাড়ি থেকে এসআই আমিনুল হক সঙ্গীয় ফোর্স সহ তাকে আটক  করেন ।

তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দর থানা, হালিশহর থানা সহ বিভিন্ন জায়গায় একাধীক মামলা ও মামলার বিপরীতে এরেষ্ট ওয়ারেন্ট রয়েছে।

এতদিন সে পালিয়ে বেড়ানোর পর এবার তাকে খুঁজে পেয়েছে পুলিশ ।

জানা গেছে, মমতা মানুষকে চাকুরির লোভ দেখানো,ব্যবসার লাইসেন্স তৈরি করে দেওয়া, ভুয়া আইডি কার্ড বানিয়ে মানুষকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে ব্যবহার করা, এমন কি মেয়ে বিয়ে দিয়ে দেবে বলে তাদের বিয়ের কার্ড ছাপিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ক্লাব বরাদ্ধের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ছেলের ঠিকানায় গিয়ে মেয়ের বাবা কাউকে না পাওয়ার মতো মারাত্বক অভিযোগও রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটে গোপনে যাত্রী পারাপার : ১০ হাজার টাকা জরিমানা।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রতারক মমতা সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৭০/৮০ জন থেকে কোটি টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছে। এ সব প্রতারনার জন্য সে নিজেকে কারো কাছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গোল্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর, কখন বিভিন্ন রকম অফিসার সেজে প্রতারনা, কখনো বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসতো।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মমতাজ এর পিতা মোঃ মোমিন মাষ্টার, পেলিশ্যার বাড়ি বা বেদন মিয়ার পুরাতন বাড়ি মাঈট ভাঙ্গা ৬ নং ওয়ার্ড হলেও বর্তমান ঠিকানা বিশ্বকলোনী কাঁচা বাজার অনিলা ম্যনসন চতুর্থ তলায় তিনি থাকতেন। কিন্তু প্রতি দুইমাস অন্তর অন্তর মানুষকে ধোকা দিতে তার বাসা পরিবর্তন করতেন বলেও ভুক্তভোগীরা জানান। তবে যে বাসাতে উঠতেন সেটা খুবই আলিশান বাসা থাকতো এবং অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তিদের যাওয়া আসা থাকতো তার বাড়িতে।

সর্বপ্রথম তার বিরুদ্ধে প্রতারনার অভিযোগে বন্দর থানায় একটি মামলা করে এজার মিয়া নামে এক লোক। ২০১৮ সালে ৪০৬/৪২০/৪৬৮/৪৭১ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন তিনি । এরপর একই বছরে আমিনুল ইসলাম নামে অপর একজন মামলা করলেও বার বার আটক হয়ে অদৃশ্য এক ক্ষমতা বলে জামিনে বের হয়ে আবারো প্রতারণার চালিয়ে যায়।

এমনকি তার এ সমস্ত কাজে সহযোগী হিসেবে বড় বড় ব্যক্তিত্বের নামও বেরিয়ে এসেছে।

ভুক্তভোগী মাইটভাঙ্গা ৭ নং ওয়ার্ডের মোঃ আব্দুল করিম জানান, আমার থেকে কুরিয়ার ব্যবসার লাইসেন্স তৈরি করে তার এজেন্ট করার জন্য ৩ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা নিয়েছে । তার বিনিময়ে ব্যবসা দিতে না পেরে একটি চেক দিলেও বিভিন্ন কৌশলে তা আবার নিয়ে ফেলেছে ।

মগধরা ৯ নং ওয়ার্ড মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন, আমাকে বন্দরের চাকরি দেবে বলে বিভিন্ন সময়ে ১ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা নিয়েছে । চাকরি নিয়ে টালবাহানা করার পর টাকা ফেরত চাইলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

আরো পড়ুনঃ কুমিরা-গুপ্তছড়া: মার্চেও আসেনি যাত্রীদের সুদিন

একই বাড়ির জেসমিন আকাতর জানান, আমার ছেলেকে ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার শর্তে তার থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আর ধরা দেয়নি।

এছাড়াও সারওয়ার জামাল, মোঃ আজিম উদ্দিন, মাঈন উদ্দিন মাষ্টার, কাদের, কবির মেম্বার সহ প্রায় শতাধীক ব্যক্তি থেকে টাকা নিয়েছেন বলে জানা যায়। আর টাকা ফেরত চাইলে সে তার নিজস্ব অস্ত্র ও সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা তাদের মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দিতো বলে জানান ভুক্তভোগীরা। আটক হওয়ার খবরে, কিছুটা আশ্বান্বিত হলেও আইনের ফাঁক ফোঁকর দিয়ে যাতে না বেরুতে পারে সেটাই কামনা করছে প্রশাসনের নিকট।

এ ব্যাপারে সন্দ্বীপ থানার ওসি শেখ শরিফুল ইসলাম জানান, মমতাজ বেগম দীর্ঘ সময় ধরে কখনো বিমান অফিসার কখনো সরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মচারী পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারনা করে আসছিলো। এবং তাদের চাকুরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতো। মুলত প্রতারনা করা তার পেশা ।

তিনি আরো জানান, তার প্রতারনার স্টাইল অনেকটা পাপিয়ার মতো, তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের বিভিন্ন থানায় মামলা ও মামলার বিপরীতে ওয়ারেন্টের জের ধরে তাকে আটক করা হয়েছে। তবে সব প্রতারনার লেনদেন সে চট্টগ্রাম বসে করতো। তার গ্রেফতারের খবর পেয়ে অনেকে সন্দ্বীপ থানায় অভিযোগ করতে আসলেও তাদের কাছে কোন ডকুমেন্ট নেই কারন সু-কৌশলে সে প্রমান রাখতোনা।

সন্দ্বীপ জার্নাল/বিআরএস


Skip to toolbar