• শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪২ অপরাহ্ন

অর্থনৈতিক লাভের চিন্তায় হচ্ছে পরীক্ষা: সন্দ্বীপ-চট্টগ্রাম সরাসরি ফেরি সার্ভিস চালুর উদ্যোগ

সন্দ্বীপ জার্নাল ডেস্ক: / ৫৯০ ৪ ৯
আপডেট: শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪
বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সাথে কুমিরা হয়ে সন্দ্বীপের মধ্যকার সরাসরি ফেরি সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
সন্দ্বীপ-চট্টগ্রাম

বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সাথে কুমিরা হয়ে সন্দ্বীপের মধ্যকার সরাসরি ফেরি সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। মূল ভূখন্ডের সাথে সন্দ্বীপের নৌযোগাযোগ ব্যবস্থা নিরাপদ, সহজতর ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত ২৭ অক্টোবর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম গতিশীল হয়েছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ সরাসরি ফেরী সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

জনআকাঙ্খা পূরণে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিবেদিত ভূমিকা পালনে উপদেষ্টার নির্দেশনার প্রেক্ষিতে, চট্টগ্রাম জেলার মূল ভূখন্ডের সাথে সন্দ্বীপের যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে সার্বিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠিত হয়। কমিটির প্রতিবেদনে নিরাপদ ও সহজ নৌযোগাযোগ স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে দ্বীপাঞ্চলের লাখো মানুষের নিত্যদুর্ভোগ ও জীবনঝুঁকি নিরসনে আশাবাদী সন্দ্বীপবাসী।

সন্দ্বীপে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বসবাস করে। জীবন-জীবিকা, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো জরুরি কাজে এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনে দীর্ঘদিন ধরে এ জনপদের বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে বন্দরনগরীতে এবং চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্থানে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। চট্টগ্রাম সমুদ্র উপকূল ও সন্দ্বীপের মাঝখানে রয়েছে উত্তাল নৌ-চ্যানেল, এই নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ কি.মি.।

আরো পড়ুন: কুমিরা-গুপ্তছড়া: মার্চেও আসেনি যাত্রীদের সুদিন

ঝুঁকিপূর্ণ এ পথ পাড়ি দেয়ার জন্য জনসাধারনকে নির্ভর করতে হচ্ছে বিআইডব্লিউটিসি’র একটি স্টিমার এবং অননুমোদিত স্পীডবোটের ওপর। স্টিমার নিরাপদ নৌযান হলেও এতে ওঠানামায় ভোগান্তি অশেষ। কুমিরা ঘাট থেকে স্থানীয় লালবোটের মাধ্যমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা দেড় থেকে ২ কি.মি. উত্তাল সাগর পথ পাড়ি দিয়ে মেইন স্ট্রিমে নোঙরকৃত নৌযানে উঠতে-নামতে হয়। বৈরী আবহাওয়ায় প্রবল জোয়ারের সময় সাগরে প্রচন্ড- ঢেউয়ে জীবন মরণ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ অবস্থায় ক্ষুদ্রাকার লাল বোটগুলোতে ভয়াবহ রকমের ঝাঁকুনি, দুলুনি এমনকি দুর্ঘটনার মুখোমুখিও হয়। এতে শিশু, নারী ও বয়োবৃদ্ধ যাত্রীরা নৌযাত্রায় প্রতিনিয়ত অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন। ২০১৭ সালে স্টীমার থেকে নেমে লালবোটে করে যাত্রীরা তীরে যাওয়ার সময় তা ডুবে যায়। এতে নারী শিশুসহ ১৮ জন প্রাণ হারান। ৫ বছর হলেও নিহতদের পরিবারকে কোন ক্ষতিপূরণ দেয়নি দায়িত্বশীল কোন পক্ষ।

সন্দ্বীপের প্রান্তেও যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণ দীর্ঘদিন যাবত সমস্যার স্থায়ী ও টেকসই সমাধান চেয়ে আসছেন। এদিকে ঘাটের কাছাকাছি নাব্যতা কম। এরজন্য বিআইডব্লিউটিসি’র স্টিমারকে গুপ্তছড়া ঘাট থেকে প্রায় এক থেকে ২ কি.মি. দূরে নোঙর করতে হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সহজ ও নিরাপদ যোগাযোগের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সরাসরি ফেরি চলাচলে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং তা অবিলম্বে চালুর লক্ষ্যে জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। উভয় প্রান্তে সরু সংযোগ সড়ক, নাব্যতা সঙ্কট, অর্থনৈতিকভাবে প্রক্রিয়াটি লাভজনক হবে কিনা ইত্যাদি বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সড়ক সংস্কার ও প্রশস্তকরণে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, ফেরীঘাট স্থাপন, নৌপথ জরিপ ও নাব্যতা রক্ষায় বিআইডব্লিউটিএ এবং ফেরির সংস্থান করতে বিআইডব্লিউটিসি সমন্বিতভাবে কাজ করছে বলে কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়।

সন্দ্বীপ জার্নাল/ইএএম


Skip to toolbar