বাদল রায় স্বাধীন:
গুপ্তছড়া -কুমিরাঘাটে যাত্রীদের ভোগান্তির প্রতিনিয়ত অভিযোগ, স্টাফদের খারাপ ব্যবহার ও অতিরিক্ত ভাড়ার প্রতিবাদে সন্দ্বীপের মানুষ দীর্ঘ বছর ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে এবং সংবাদকর্মীদের কলমে তুলে ধরা বিভিন্ন অনিয়মের সংবাদ প্রচারের চাপে অবশেষে পত্রিকা অফিসে গিয়ে ঘাট ইজারাদারের যাত্রীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করার প্রতিশ্রুতি জনমনে কিছুটা প্রশান্তি এনেছিলো।
গুপ্তছড়া – কুমিরা ঘাটে ভ্যান গাড়ি ভাড়া প্রতিজনে দশ টাকা করার ঘোষণা, হাফ ভাড়া ২০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা প্রবাসী যাত্রীদের জন্য আলাদা টিকেট ব্যবস্থা, কর্মীদের জেলা পরিষদের লগো সম্বলিত টি-শার্ট পরিধান, ওজন অনুযায়ী পন্যের ভাড়া ইত্যাদি ছিলো উল্লেখ যোগ্য। তার মধ্যে হাফ ভাড়া ১৫০ টাকা ও ভ্যানভাড়া ১০ টাকা বাস্তবায়ন হয়েছে তাও শুধু নামে মাত্র ।
কারন এই দশ টাকা ভ্যান ভাড়া কোন সুফল বয়ে আনেনি। কৌশলে তারা বিশ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সাধারণ মানুষের জন্য এটা আরো বেশী বিব্রতকর হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, তিনজন যাত্রী ভ্যান উঠে বসার পর ভ্যানওয়ালা বললো তিনজনে ৫০ টাকা দিতে হবে। যখন কেন বলে প্রশ্ন করা হলো সে বললো অন্য যাত্রী নেই তাই। সাথে সাথে যখন একজন বললো আমাদের সাথে আরো একজন আছে তখন সে বললো আমি তিনজনের বেশী নিয়ে যাবোনা। কেন যাবোনা তার সঠিক উত্তর না দিয়ে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে ও মারমুখী আচরন করে। তখন সে অন্য যাত্রী নিতে গেলে তাকে যাত্রীরা বাধা প্রদান করলে সে আরো খারাপ ব্যাবহার শুরু করে। সচেতন যাত্রীদের দৃঢ় প্রতিবাদে অন্য একটি গাড়ি এসে চারজন তুলে আর নেওয়া যাবেনা বলে গাড়ি ছেড়ে দেয় এবং তাদের নামিয়ে দিয়ে ৫০ টাকা ভাড়া চেয়ে বসে। অর্থাৎ তারা বিভিন্ন অজুহাতে তিনজনের বেশী যাত্রী বহন এখন সিন্ডিকেট করে বন্ধ করে দিয়েছে।
আরো পড়ুনঃ একটি মানবিক সাহায্যের আবেদন
গেলো ২১ ফেব্রুয়ারী সমাজকর্মী জিহাদ বাবু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার স্টেটাসে লিখেছেন গত পনেরো দিন আগে আমরা চার জন চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ঘাটে যাই আমাদের প্রতিজনের সাথে একটি করে ব্যাগ শুধু মাত্র একজনের সাথে একটি বড় ব্যাগ ছিল। ব্রিজের মাথা থেকে একটি ভ্যানে উঠতে চাইলে তারা আলাদা আলাদা ভ্যান নিতে বলেন, একটি ভ্যানে সবাই যাওয়া সম্ভব না বলে অস্বীকৃতি জানান।পরবর্তীতে বাকবিতন্ডায় না গিয়ে তাদের কথায় মেনে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
গত দুইদিন আগে চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপ ঘাটে একটি বইয়ের ব্যাগ আসার পর ,সেটি ভ্যানে তুললে তারা আর আলাদা যাত্রী নেয়নি, এমন কি অন্য দুজন একই ভ্যান শেয়ার করতে চাইলেও ভ্যান ওয়ালা তাদের ভ্যানে তুলে নেয়নি ।
জানা যায়, প্রতি ভ্যানে যদি কারো একটি বস্তা বা ব্যাগ থাকে সেই ভ্যানে দুই জনের বেশি যাত্রী উঠায় না। সর্বোচ্চ তিন জন উঠায় প্রতি ভ্যানে যদি তাদের সাথে সিঙ্গেল ব্যাগ থাকে। আর যাত্রীদের সাথে ভ্যান ওয়ালাদের বাকবিতন্ডা তো রোজকার ব্যাপার! অন্যদিকে ব্যাক্তিগত পরিবহনে কেউ ঘাটে গেলে মালিকানাধীন বাইক গুলি ব্রিজের মাথা পর্যন্ত নেয়ার সুযোগ থাকলেও সেটিও বন্ধ করে দিয়েছে ভ্যানওয়ালাদের সিন্ডিকেট।
সাধারন যাত্রীরা বলছেন, ইজারাদারের ইশারায় দশ টাকার ভ্যানের ঘোষণা নতুন ভোগান্তি যা গাধার সামনে মুলা ঝুলানোর মতো ব্যাপার । এবং চলমান আন্দোলনের গতি নষ্ট করাটাই পত্রিকা অফিসে গিয়ে এমন ঘোষনার মুল উদ্দেশ্য বলে জানান ভুক্তভোগীরা ।
অপর দিকে ঘোষণা অনুযায়ী প্রবাসীদের জন্য আলাদা কাউন্টার করার প্রতিশ্রুতি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। হলেও তার সাথের যাত্রীদের এক সাথে যদি টিকেট না দেয় তাহলে সেটিও মুলা ঝুলানোর মতো সুফল পাবেনা তারা বা তার আত্মীয় পরিচয় দানের জন্য বিদঘুটে শর্ত আরোপ করে মানুষকে নিরুৎসাহী করা হবে ।
ঘাটের কুলিদের আলাদা ড্রেস চালু না হওয়ায় সকল সুবিধা দানের প্রতিশ্রুতি পত্রিকার নিউজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ।