নুর নবী রবিন:
ঝর্ণা বেগম। ছোট ছেলের জন্মের পরই বিধবা হয়েছেন। ৬ সন্তানকে আগলে ধরে কোনোরকম শাক লতাপাতা সেদ্ধ করে খেয়ে বেঁচে আছেন। মানুষের বাড়িতে কাজ করে যেটুকু পায়, তা দিয়ে শান্তনা দেয় সন্তানদের।
এতো কষ্টে দিনাদিপাত করলেও ইউনিয়ন পরিষদের কোনো সরকারি সহায়তা পান না তারা। এর কারণ হিসেবে ঝর্ণা বেগম বলেন, ‘ এমপি সাহেব যে ত্রাণ দিছেন, সেগুলো পাইছি। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাই না। আমরা নাকি এখানের ভোটার না, তাই ত্রাণ পাইনি।’ ঝর্ণা বেগমের জাতীয় পরিচয় পত্রে দেখা যায়, হরিশপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
জানা যায়, ১০ বছর আগে সন্দ্বীপের বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন উড়িরচর এসে বসবাস শুরু করেন তিনি। দীর্ঘসময় ধরে উড়িরচরে বসবাস করলেও লোকবল ও পদ্ধতি না জানার কারণে জাতীয় পরিচয় পত্রে ঠিকানা পরিবর্তন করতে পারেনি।
আরো পড়ুনঃ দুর্বল বেড়িবাঁধ নিয়ে পনির চেয়ারম্যানের দিনরাতের যুদ্ধ
ঝর্ণা বেগমের মতো সন্দ্বীপের কালাপানিয়া ইউনিয়ন থেকে উড়িরচর এসে বসবাস করছে মোহাম্মদ ফজলুল হক। রাস্তায় ঘুরেঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রি করে যেটুকু পায়, তা দিয়ে চলে ফজলুল হকে সংসার। কিন্তু লকডাউনের কারণে এখন আর ঝালমুড়ি বিক্রি করতে পারছেননা তিনি। ফলে তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে তার ঘরে।
অশ্রুভরা চোখে ষাটোর্ধ বয়সী ঝালমুড়ি বিক্রেতা ফজলুল হক বলেন, এমপি সাহেবের জন্য কলোনিতে থাকার একটা ঘর পাইছি। উড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমি কিছু পাই না। আমার নাকি আইডি কার্ডের ঠিকানা ভিন্ন ইউনিয়নের।
এ বিষয়ে উড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রহিম বলেন, সরকারী যতো অনুদান, ত্রাণ দেওয়া হয়; সবগুলোর ওয়ার্ডভিত্তিক লিস্ট করা হয়। প্রতি ওয়ার্ডের মেম্বাররা লিস্ট করেন। যে দু’জনের কথা বললেন, তারা উড়িরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা না। ফলে মেম্বাররা ত্রাণের লিস্টের মধ্যে তাদেরকে যুক্ত করতে পারেন না।
এদিকে কালাপানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলিমুর রাজী টিটু জানান, কেউ উড়িরচরে বসবাস করলেও, আমরা তাদের তথ্য পেলে ত্রাণ পৌঁছে দিব।
সন্দ্বীপ জার্নাল/এনএনআর