• মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন

খাদ্য বিভাগের পৌষ মাস: কৃষকের সর্বনাশ

সন্দ্বীপ জার্নাল ডেস্ক: / ৬৩১ ৪ ৯
আপডেট: মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০২০

বাদল রায় স্বাধীনঃ


কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা দরে ধান কেনার সার্কুলার দিয়ে ১ কেজি ধানও কিনেনি   , এমন অভিযোগ উঠেছে খোদ খাদ্য বিভাগের বিরুদ্ধে ।

জানা গেছে, সম্প্রতি উড়িরচরে কৃষকদের জমিতে আমন ধানের ভালো ফলন হওয়ার পরও ন্যায্য মুল্য না পেয়ে জমি থেকে ধান না কেটে জমিতে আগুন দিয়ে ধান পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো কৃষকরা।

এমন একটি সংবাদ দৈনিক পূর্বকোনে প্রকাশিত হলে খাদ্য অধিদপ্তর কৃষকদের সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান কেনার সার্কুলার দেয় । জোরেশোরে মাইকিং করে ধান কিনবে বলেই । এজন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও করে এলএসডি ।

পরবর্তীতে সন্দ্বীপ খাদ্য বিভাগ একটি নোটিশ দেয়, যার স্লোগান ছিলো “গুদামে গুদামে কৃষকের ধান,বাঁচে কৃষক বাঁচে প্রাণ “ । নোটিশে  উল্লেখ করা হয় চলতি অভ্যন্তরীন আমন সংগ্রহ ২০১৯-২০ মৌসুমে প্রকৃত কৃষকদের উৎপাদিত আমন ধান সরকারী খাদ্যগুদামে সরকার নির্ধারিত ২৬ টাকা মুল্যে ক্রয় করা হচ্ছে। তবে সংগ্রহযোগ্য ধানের মান( বিনির্দেশ) এ বলা হয় আদ্রতা ১৪% সর্বোচ্চ, বিজাতীয় পদার্থ ০.৫% সর্বোচ্চ, ভিন্ন জাতের ধানের মিশ্রন ৮% সর্বোচ্চ, অপুষ্ট ও বিনষ্ট দানা ২% সর্বোচ্চ, বর্ন উজ্জল সোনালী ও গন্ধ স্বাভাবিক হতে হবে।

এতে কৃষকরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে আনবে এমন ভাবনা সবারই ছিল । কিন্তু ঘটনা ঘটলো উল্টো !

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ সার্কুলারের বিপরীতে ১ কেজি ধানও ক্রয় করেনি খাদ্য বিভাগ ।

কৃষকদের অভিযোগ, সন্দ্বীপ এলএসডি বা খাদ্য গুদামের খাদ্য নিয়ন্ত্রক রবীন্দ্র লাল চাকমা ও গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবাশিষ দাস নিজেদের কাজের চাপ বাড়ার ভয়ে “কৃষকদের ধানের মান ভালো নয়” অজুহাত দিয়েছেন ।

৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা আব্দুল বাছেদ সবুজ জানান, ধানের মান এখানে বিবেচ্য বিষয় নয়। ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত মুলত কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে আনার জন্য নেয়া হয়েছিলো। তার জন্য সার্কুলার তৈরিতে আমিও পরিশ্রম করেছি। কিন্তু কমিটির দ্বিতীয় সভায় খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা বললেন মাত্র তিনজন কৃষক যোগাযোগ করেছে এবং ধানের সেম্পল নিয়ে সেগুলো যাচাই করে মান সঠিক পাওয়া যায়নি তাই দ্বিতীয় সভায় ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।

আরো পড়ুনঃ 

কৃষক নেতা ওমর ফারুকের অভিযোগ, কৃষকরা ধান নিয়ে যাওয়ার পর সেম্পল ভালো নয় অজুহাত দেখানোতে আমাদের মনে হয়েছে তারা আসলে ধান কিনবেনা। কারন আমাদের উৎপাদিত ধানের মান এতো খারাপ নয় যে এগুলো কিনে গুদামজাত করা যাবেনা। এ সার্কুলার শুধু মাত্র মানুষকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য গুদামের নিয়ন্ত্রক রবীন্দ্র লাল চাকমা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ।

তিনি বলেন, আমাদের কাজের লোড বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে ধান কেনা হয়নি এ অভিযোগ মিথ্যা। আমার কাছে তিনজন কৃষক ধান নিয়ে যোগাযোগ করেছে, আমি তাদের বাড়ি গিয়েও দেখেছি কিন্তু ধান কেনার বিনির্দেশ অনুযায়ী ধানের মান ভালো নয় বলে তা কেনা হয়নি।

খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবাশিষ দাস বলেন ধান সারা দেশে ক্রয় করা হয় তবে বিনির্দেশ অনুযায়ী। তাই ধানের মান খারাপ হলে আমরা কিভাবে কিনবো ?

সন্দ্বীপে ধান কেনার সিদ্ধান্ত মান যাচাই নয় কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে আনার জন্য নেওয়া হয়েছিলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্তের মাঝামাঝি সময়ে এ অফিসে যোগ দিয়েছি তাই সে বিষয়টি এবং আমাদের সন্দ্বীপের কৃষকদের সমস্যা আমার ভালো ভাবে জানা ছিলোনা ।


Skip to toolbar