• মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০১ পূর্বাহ্ন

সন্দ্বীপে ইউপি মেম্বারের চাল কেলেঙ্কারী: ভয়ে মুখ খুলতে চায়না কেউ 

সন্দ্বীপ জার্নাল ডেস্ক: / ৮৩৪ ৪ ৯
আপডেট: মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০
আসিফ মেম্বার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা:১২০ কেজি চাল উদ্ধার
আসিফ মেম্বার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা:১২০ কেজি চাল উদ্ধার

ইশতিয়াক আহমেদ মেহরাজ:


সারিকাইত ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আসিফ মেম্বারের বিরুদ্ধে চাল কেলেঙ্কারীর অভিযোগ উঠেছে ।

জানা গেছে, গরিবের জন্য সরকার ঘোষিত ১০ টাকা দরে ৩০ কেজি চাল বিতরনে ব্যাপক অনিয়ম করছেন তিনি । ৩০ কেজি চালের জন্য ৩০০ টাকা নিয়ে তিনি মানুষকে ২৪ কেজি চাল দিয়ে বিদায় করে দিচ্ছেন ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিনি সারিকাইতে চালের ডিলার নন, প্রায় ৩ বছর ধরে তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানার নামে তিনি চালের ডিলারশীপ নিয়ে নিজেই পরিচালনা করছেন, সরকারি চাল বস্তা থেকেবের করে সেখান থেকে ২৪ কেজি করে সবাইকে অন্য বস্তায় দিচ্ছেন ।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতিবার চাল বিতরণে অনিয়ম করে তিনি বছরে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ।

এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে সারিকাইত ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ মিজানকে ।

বস্তা খুলে চাল দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সন্দ্বীপ জার্নালকে তিনি বলেন, এটা ৩০ কেজির বস্তা সরকার পাঠাচ্ছে ৩০ কেজির বস্তাই দিয়ে দেয়ার কথা , কিন্তু ওনারা বস্তা খুলে অন্য বস্তায় চাল দিচ্ছে । আমার ওয়ার্ডের ২ জনের চাল ওজন করে দেখলাম সেখানে ৩০ কেজির বদলে ২৪ কেজি ২০০ গ্রাম চাল আছে, এটার ডকুমেন্ট আমার কাছে আছে ।

চাল কেলেঙ্কারী

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য একজন ইউপি মেম্বার বলেন, মাসখানেক আগে একটা মিটিংয়ে আমি আসিফ মেম্বারকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম তিনি কত কেজি চাল দেন , বললেন ২৫ কেজি , কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার পোষায় না । এটা কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত জনপ্রতিনিধির বক্তব্য হতে পারেনা । ডিলারশীপ পাবার পর থেকে সারিকাইতে মানুষ চাল পায় ২৫ কেজি মাপ দিলে হয় ২২ কেজি ।

তিনি আরো বলেন, আসিফ মেম্বার বেপরোয়া ভাবেই এসব অনিয়ম করে যাচ্ছেন । রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রভাবে সব অবৈধ কর্মকান্ড করে পার পেয়ে যাচ্ছেন । তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায়না ।

আরো পড়ুনঃ  ফোন করলেই বাড়িতে পৌঁছে যাবে সাংসদ মিতার “ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম”

সারিকাইত ৫ নং ওয়ার্ডের একজন ভুক্তভোগী জানান, আমরা সরকারি বস্তায় পাইনা , বাড়িতে এসে ওজন করে দেখলাম ২৪ কেজি , অথচ আমাদের কাছ থেকে ৩০ কেজির জন্য ৩০০ টাকা বরাবর নিয়েছে । আজ কয়েক বছর যাবৎ আমরা এমন নিগ্রহের শিকার হচ্ছি ।

অনিয়মের বিষয়টি জানতে চাইলে অভিযোগ গুলো উড়িয়ে দিয়েছেন আসিফ মেম্বার ।

সন্দ্বীপ জার্নালকে তিনি বলেন, আমাদের চাল দেয়া শেষ হয়ে গেছে, এখন ফেসবুকে কিছু ফাজিল আমাদের বিরুদ্ধে গ্রূপিং করতেছে, আমি আজকে গোডাউনে বলে দিয়েছি আমি আর মাল ও নিব না । আমরা গোডাউনে সাড়ে ১৮ হাজার টাকা দিয়ে আসছি, আপনাদের কে হিসাব দিচ্ছি , গাড়ি ভাড়া সহ আমরা সাড়ে ১৮ হাজার টাকা দিয়েছি । গোডাউনে মাপে কম দেয় , আপনারা বুজদার মানুষ , সেখানে ১০ টাকা করে খরচ যা ব্যাংকে জমা দেই । আবার গোডাউনে আলাদা করে দিতে হয় , ২-৩ জায়গায় টাকা দিতে হয় গোডাউনে, সব ডিলারই এভাবে দেয়। একট্রিপে কুলিও সাড়ে ৪ হাজার টাকা নিয়ে যায় । এভাবে হলে আগামী ট্রিপ থেকে কেউ মাল নিবেনা ।

সন্দ্বীপ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রবীন্দ্র লাল চাকমা সন্দ্বীপ জার্নালকে বলেন, ওরা বস্তা খুলবে কেন ? বস্তা খোলার কোনো নিয়ম নেই ৩০০ টাকা নিয়ে এক বস্তায় ৩০ কেজি চাল দিয়ে দেয়ার কথা । এ  বিষয়ে আমার কাছে এখনো অভিযোগ আসেনি , আমি জানতামই না বিষয়টা।

লিখিত কোনো অভিযোগ আসলে আমরা ব্যবস্থা নিব ।


Skip to toolbar